Tuesday, August 16, 2011

সতেরো আগস্ট - শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার

সন্ধ্যাবেলায় বাবা হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে বলল আমাকেই ডায়িং স্টেটমেন্ট নিতে হল। ছেলেটার নাম বাচ্চু চক্রবর্তী, সিপিএম করে। এভাবেই ক্লাস ফাইভের বালক আমার জীবনের সাথে যুক্ত হয় ভাষা আন্দোলনের দ্বাদশ শহীদ বাচ্চু চক্রবর্তীর নাম। তার পরদিনই বোধহয় শিলচর শহরের সেই ঐতিহাসিক শেষ যাত্রা। ভাষা আন্দোলনের সময় প্রতিদিন যেমন আমাদের মিছিলে নিয়ে যাওয়া হত, সেদিনও একইভাবে স্কুল থেকে শেষযাত্রায় নিয়ে যায় ওপরের ক্লাসের ছাত্ররা। তারপর শহরময় শুধু একই আলোচনা, আলোচনা আমার সরকারি আমলা বাবার অন্দরমহলেও। ভাষা আন্দোলনকে দুর্বল করার জন্যেই এই খুন করা হয়েছে। অবিভক্ত কাছাড় জেলার সর্বত্র ছাত্র সমাজ সহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ বাচ্চু চক্রবর্তীকে বরণ করে নিলেন ভাষা আন্দোলনের দ্বাদশ শহীদ হিসেবে। পরের বছর ১৯ শে মে গোটা জেলায় পালিত হল দ্বাদশ শহীদ দিবস হিসেবে। সেদিন বাবার সরকারি গাড়িতে বিলপারে দাদুর বাড়ি যাবার পথে নানা জায়গায় শহীদ বেদি দেখে দেখে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ কোথাও কোনও শহীদ বেদিতে দ্বাদশ না লিখে একাদশ লেখা দেখলেই দাদা বলে উঠেছে, বেইমান। বলা বাহুল্য, সেদিন শিলচর শহরে খুব অল্প কয়েকটি বিচ্ছিন্ন জায়গায়ই আমরা একাদশ শহীদ স্মরণে কথাটা লেখা দেখেছিলাম। সারা শহরের অধিকাংশ শহীদ বেদিতেই লেখা ছিল দ্বাদশ শহীদ স্মরণে। বাচ্চু চক্রবর্তীর শহীদত্ব নিয়ে দল-মত নির্বিশেষে প্রায় কারোর মধ্যেই কোনও সংশয় ছিল না। 'প্রায়' কথাটা এজন্যেই লেখা, সে বছর একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের অফিসের ভেতরের শহীদ বেদি ও খুব অল্প কয়েকটি পাড়ার ক্লাবে লেখা ছিল একাদশ শহীদ কথাটি। ওই সময়ে তৎকালীন কাছাড় জেলায় ওই দলের বিরুদ্ধে জনমতের কি প্রবল হাওয়া বইছিল তা পুরোনো লোকেদের নিশ্চয়ই মনে আছে। ১৯৭৪ সালেও ১৯ মে দ্বাদশ শহীদ দিবস হিসেবে পালিত হল কাছাড় জেলার সর্বত্র। চিত্রটা পাল্টে দিল জরুরি অবস্থা। ১৯৭৫ সালে জরুরী অবস্থার সময়ে ১৯ মে'র আগে ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে একটি ডিমাই সাইজের লিফলেট বের হয়। সেখানে বড় বড় হরফে লেখা ছিল ১৯ মে একাদশ শহীদ দিবস পালন করুন। বাচ্চু চক্রবর্তীর সহযোদ্ধা ছাত্রনেতারা বা ভাষা সংগ্রামীরা হয় তখন জেলে, নয়ত জরুরি অবস্থার নিষেধাজ্ঞায় প্রকাশ্য রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে অপারগ। ছাত্র পরিষদের তখনকার নেতারা এখন কেউই আর সক্রিয় রাজনীতি করেন না। কিন্তু তারা নিশ্চয়ই কেউ বিস্মৃত হন নি, কিভাবে তারা সেদিন জরুরি অবস্থার সুযোগ নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় ক্লাবগুলোকে দিয়ে দ্বাদশ শহীদকে ভুলিয়ে দেওয়ার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এখনও মনে আছে, আমাদের বাড়ির বৈঠকখানায় কে জানি বলেছিলেন এক সান্ধ্য আসরে, ইমারজেন্সির সুযোগ নিয়ে কেমন বিকৃত হয়ে গেল ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস। শুধু শহীদ বেদি নয়, কিছুদিন পর জানা গেল শহীদ বাচ্চুর প্রধান হত্যাকারীরা মুক্ত হয়ে গেছে। ১৯৭৩, ১৯৭৪ সালে যেমন সারা জেলাতেই ১৯ মে পালিত হয়েছিল দ্বাদশ শহীদ দিবস হিসেবে, আর শুধুমাত্র নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের প্রভাবাধীন জায়গায় ১৯ মে ছিল একাদশ শহীদ দিবস, তেমনি ১৯৭৭-পরবর্তী সময়ে হিসেবটা উল্টে গেল। দেখা গেল জরুরি অবস্থায় বাচ্চুকে যেভাবে জনমন থেকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, তার রেশ রয়ে গেছে। তখন 'দ্বাদশ শহীদ' শব্দবন্ধটি নির্বাসিত হয়ে পড়ল অন্য একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রভাবাধীন জায়গায়, আর উপত্যকার সাধারণ পরিসরে নানা যুক্তি দেখিয়ে ১৯ মে'কে একাদশ শহীদ দিবসে পরিবর্তিত করে দেওয়া হল। আমরা যখন বামপন্থী ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত হয়েছি, তখন, সম্ভবত ১৯৮০ বা ১৯৮১ সালে শিলচর শ্মশান ঘাটে শহীদ বেদি নির্মাণকে কেন্দ্র করে আবার বরাকের রাজনীতিতে বাচ্চু চক্রবর্তীর নাম প্রবলভাবে উঠে এল। সন্তোষ মোহন দেবের নেতৃত্বাধীন শিলচর পুরসভা শিলচর শ্মশান ঘাটে দ্বাদশ শহীদ শিলা তুলে দিয়ে একাদশ শহীদ বেদি নির্মাণ করতে গেলে এসএফআই-এর নেতৃত্বে শিলচরে এক তুমুল ছাত্র আন্দোলন গড়ে ওঠে। আমরা শহরের স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে বিশাল মিছিল করে তৎকালীন পুরপতি সন্তোষ মোহন দেবের সামনে হাজির হলে, আমাদের জোরালো দাবির উত্তরে তিনি বলেন, বাচ্চুকে আমি শহীদ হিসেবে স্বীকার করি, কিন্তু এ কথাটি বলতে আমার রাজনৈতিক অসুবিধা আছে। আমরা তখন তাঁকে বলি, আপনি বারোটি শিলা তুলে এগারোটি বেদি তৈরি করছেন কেন? তিনি বলেন, বারোটি বেদি তৈরি করারও আমার রাজনৈতিক অসুবিধা রয়েছে। আমাদের জোরালো প্রতিবাদের উত্তরে তিনি খানিকটা চ্যালেঞ্জের সুরে বলেন, তোমরা যদি চাও তো নিজেরা কর না কেন? তোমরা তৈরি করলে আমার আপত্তি নেই। তখনকার এসএফআই নেতা ও বামপন্থী দলীয় নেতারা মুহূর্তের মধ্যে এই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্যে তৈরি হয়ে গেলেন। তখন শিলচর পুরসভায় চারজন বামপন্থী সদস্য ছিলেন। তাঁদের সাথে পরামর্শ করে আমরা সঙ্গে সঙ্গেই দ্বাদশ বেদি তৈরির কাজে নেমে পড়ি। পুরসভা কর্তৃপক্ষ ভাবতেই পারেন নি যে আমরা এই চ্যালেঞ্জ এভাবে গ্রহণ করতে পারব। তারপরও তারা বাধা দান করলেন এই বলে, দ্বাদশ বেদিটি অন্য এগারোটি বেদি থেকে খানিকটা দূরত্ব রেখে তৈরি করতে হবে। আমরা বললাম, আমরা তাতেও রাজি। আমরা জানতাম, শহীদ বেদির দূরত্ব দিয়ে বাচ্চু চক্রবর্তীর মত ভাষা আন্দোলনের প্রত্যক্ষ নেতৃত্ব দান করে শহীদত্ব বরণ করা নেতাকে মানুষের মন থেকে কেউ মুছতে পারবে না। শিলচর পুরসভা কর্তৃপক্ষ স্থির করলেন ১৯ মে একাদশ বেদির আবরণ উন্মোচন করবেন। আমাদেরকেও ওইদিনই বাচ্চু চক্রবর্তীর বেদিটি ওই সময়েই উদ্বোধন করতে হবে এমন জেদ থেকে এসএফআই কর্মীরা রাজমিস্ত্রির সাথে সহায়কের ভূমিকায়ও লেগে গেলেন। পদে পদে বাধা অপমান সত্ত্বেও রাতদিন কাজ করার পর ১৯ মে সূর্যোদয়ের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চু চক্রবর্তীর বেদিটিও তৈরি হয়ে গেল। পুরসভা কর্তৃপক্ষ একাদশ বেদি উন্মোচনের জন্যে শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে দিয়ে শ্মশানের গেট থেকে পদযাত্রা করে শহীদ বেদির কাছে আসার কর্মসূচি নিয়েছিলেন। সকাল থেকে নানা স্তরের শাসক দলের নেতারা আমাদের বারবার বলে আসছিলেন, আমাদের পদযাত্রা এলে ভাই, তোমরা জায়গা ছেড়ে দিও। আমাদেরটা উদ্বোধন হওয়ার পর তোমরা যা করার কোরো। সেদিন এই দাম্ভিকতার মুখে চুন মাখিয়ে দিয়েছিলেন শ্রদ্ধেয় শিক্ষবিদ প্রেমেন্দ্র মোহন গোস্বামী। পুরসভার পদযাত্রাটি নেতৃত্ব দিয়ে নিয়ে আসার সময় প্রেমেন্দ্রবাবু প্রথমেই দাঁড়িয়ে পড়লেন শহীদ বাচ্চু চক্রবর্তীর স্মরণে নির্মিত কিছুক্ষণ আগে শেষ হওয়া শহীদ বেদির সামনে। ফুল দিলেন সেখানে, মাথা নত করে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন শহীদ বাচ্চু চক্রবর্তীর প্রতি। সেই মুহূর্তে আমাদের কাছে এক কত বড় মানুষ হয়ে উঠেছিলেন প্রেমেন্দ্রবাবু এখনও মনে আছে। মনে আছে, আবেগে আমাদের কারো কারো চোখের কোণে তখন জলের রেখা দেখা দিয়েছে। দুঃখ হয় এই ভেবে যে, বাচ্চু চক্রবর্তীই বোধহয় একমাত্র ভাষা শহীদ, যাকে শহীদত্ব বরণ করার পরও বারবার খুন হতে হয়েছে কায়েমী স্বার্থাণ্বেষীদের হাতে। এ জন্যেই বাচ্চু চক্রবর্তীর শহীদ বেদির ফলকের জন্যে বিশিষ্ট শিক্ষক সুহাস রঞ্জন কর বেছেছিলেন এই দু'টি লাইন
বন্ধু, আজকে আঘাত দিও না তোমাদের দেওয়া ক্ষতে
আমার ঠিকানা খোঁজ কোরো শুধু সূর্যোদয়ের পথে।
মনে হয় যেন কবি সুকান্তের এই দুটি পংক্তি শহীদ বাচ্চু চক্রবর্তীর জন্যেই লেখা।
একাদশ দ্বাদশের লড়াই আবার আরেকবার চাগিয়ে উঠল ১৯ মে'র ২৫ বছর পূর্তির সময় ১৯৮৬ সালে। শহরের প্রাজ্ঞজনেরা তখন মতামত দিলেন, একাদশ দ্বাদশ বাদ দিয়ে দিবসটি পালিত হোক ভাষা শহীদ দিবস হিসেবে। সেই থেকে ১৯ মে'র দিনটিকে বিতর্ক মুক্ত করার এই সমাধানটি মেনে আসছেন সকলেই। এখন গোটা বরাক উপত্যকা জুড়ে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় ১৯ মে'র পাশাপাশি পালিত হয় আরো তিনটি দিন। শহীদ বাচ্চুর স্মৃতিমাখা ১৭ আগস্ট, জগন-যীশুর বলিদানের দিন ২১ জুলাই ও শহীদ সুদেষ্ণার আত্মত্যাগের দিন ১৬ মার্চ।
লড়াই শেষ হয় নি নানা দিক থেকেই। শুধু বাচ্চু চক্রবর্তীর মূল্যায়নই নয়। বরাক উপত্যকার ভাষা আন্দোলনকে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজনীতির নিরিখে মূল্যায়নের কাজটি আজও শুরুই হল না। যে বামপন্থীরা ১৯৬১ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরম্ন করে ১৯৭২ সালের ভাষা আন্দোলনে প্রত্যক্ষ নেতৃত্ব দান করেছিলেন পরবর্তীতে ভাষা সংস্কৃতির প্রশ্নগুলিকে রাজনৈতিক সংগ্রামের কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে কিছু কিছু দোদুল্যমানতা কাজ করেছে এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। অথচ এ কাজটি বামপন্থীরাই করতে পারেন। অন্যেরা এই উদ্যোগ নিলে সর্বনাশ ছাড়া হওয়ার আর কিছু নেই। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজনীতির যে একটি সাংস্কৃতিক মাত্রা রয়েছে, সমাজবিজ্ঞানী থেকে শুরু করে বামপন্থী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলিও আজ এই কথা বলছেন। কিন্তু ব্যবহারিক রাজনীতির ক্ষেত্রে এই নীতির প্রয়োগ এখনও আমরা দেখতে পাই নি। এই উদ্যোগ যদি কখনো গ্রহণ করা হয়, তখন বরাক উপত্যকার ভাষা আন্দোলনকে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে দেখে এর যথার্থ মূল্যায়ন করার যথেষ্ট প্রয়োজন রয়েছে। শহীদ বাচ্চু চক্রবর্তী শুধু একজন ভাষাসৈনিক ছিলেন না, ছিলেন বামপন্থী যুব আন্দোলনের একজন প্রথম সারির নেতা। গুয়াহাটির একটি সভায় তাঁর ভাষণ শুনে আসামের বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতা গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য কমিউনিস্ট নেতা অচিন্ত্য ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, অচিন্ত্যবাবু, কাছাড়ে আপনাদের দলে এমন ছেলে আর ক'জন আছে? যদি একাধিক থাকে, তবে সেখানে আপনাদের দলের ভবিষ্যৎ যে উজ্জ্বল, তা বলতে পারি। এমন একজন নেতার মৃত্যুবার্ষিকী থেকেই তো বামপন্থার সাথে ভাষা রাজনীতির একটি সংলাপ রচনার সূত্রপাত হতে পারে। এখন সময়টা বড় খারাপ। দূর থেকে ইন্টারনেটের পাতায় খবর পড়েও বুঝতে পারি উত্তর পূর্বাঞ্চলের আকাশে অনেক শকুন উড়ে বেড়াচ্ছে। সুতরাং এক বিকল্প সাংস্কৃতিক-রাজনীতির চর্চা শুরু করার এটাই প্রকৃষ্ট সময়।

Thursday, May 20, 2010

উনিশে মে ডট অর্গ

প্রসঙ্গটা উঠে এল হঠাৎই। গত বছর ১৯ মে’র পর কোনো একটা দিন। কলকাতায় আমাদের পাড়ায় বিশিষ্ট গায়ক ময়ূখ আর যাদবপুরের প্রাক্তন ছাত্রকর্মী সৈকতের সাথে কথা বলছিলাম ১৯ মে নিয়ে। বহুবার বরাক উপত্যকায় আসা এবং এখানকার সংস্কৃতিকর্মীদের সাথে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে ১৯ মে সম্পর্কে অনেকটাই জানে। আমাদের কথোপকথন শুনে সৈকত ১৯ মে সম্পর্কে তাঁর অজ্ঞতার কথা বলল। তখনই কথায় কথায় উঠে এল উনিশের শিরোনাম দিয়ে বরাক উপত্যকার ইতিহাস সংস্কৃতি সম্পর্কে একটি ওয়েব সাইট তৈরির সম্ভাব্যতার বিষয়। সৈকত ওয়েব তৈরির কাজের সাথে যুক্ত, ফলে সেই জিজ্ঞেস করল, কেন আমরা এই বিষয় নিয়ে একটি ওয়েব সাইট তৈরি করছি না। ময়ূখ বরাক উপত্যকার হিতাহিত বিষয়ে সবসময়েই ভাবে। সেও ভরসা দিল এমন একটি কাজ শুরু করা পক্ষে। দূর থেকে আমাদের ধারণা ছিল. একটি ওয়েব তৈরি হয়ত খুবই খরচসাপেক্ষ বিষয়। সৈকতর সাথে কথা বলে বুঝলাম, আমাদের সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক লড়াইয়ের গুরুত্ব যতটা, তার তুলনায় ওয়েব সাইট তৈরির খরচ তেমন আহামরি নয়। বরাক উপত্যকায় স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে একটি ভালো অনুষ্ঠান করতে যা খরচ হয়, একটি ভালো ওয়েব সাইট তৈরির খরচ তার চেয়ে বেশি নয়। আমার বহুদিনের স্বপ্ন ছিল বরাক উপত্যকাকে ওয়েব দুনিয়ায় হাজির করা। হাজির করা বলতে আমাদের সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক লড়াইটাকে যথার্থভাবে ওয়েব দুনিয়ায় নিয়ে আসা। এমনিতে বরাক কেন্দ্রীক যে সাইটগুলি ইতোমধ্যে ওয়েব দুনিয়ায় রয়েছে তাদের কাউকেই ছোট না করে বলতে পারি। এই মুহূর্তে সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক দিক থেকে নেতৃত্বহীনতার এক চূড়ান্ত অবস্থায় রয়েছে বরাক উপত্যকা। তাঁর প্রতিদিনের বেঁচে থাকাটাই একটা সংকট্রে মধ্যে দাঁড়িয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা দিন দিন ভেঙে পড়ছে। সমস্ত ক্ষেত্রে পরিকাঠামো পিছিয়েই যাচ্ছে দিন দিন। রেল স্টেশনের নাম পরিবর্তনের মত একটা সামান্য দাবিও পূরণ হচ্ছে না রাজনৈতিক তঞ্চকতার জন্যে। কেউ চাইছেন এটা করে নাম কিনতে, আর কেউ হয়ত চাইছেন এটা না করে কারো কাছ থেকে প্রশংসা কুড়োতে। মাঝ থেকে বরাক আরো একটি প্রবঞ্চনার শিকার হল। ব্রডগেজ খুড়োর কলের মত আমরা এগোলে আরো দূরে চলে যায়। সবচাইতে বড় সমস্যা। একটি উপনিবেশ যেমন অসহায় থাকে তাঁর মুষ্টিমেয় ধনাঢ্য ব্যক্তির জাঁকজমক আর সংখ্যাগরিষ্ঠের হাহাকার নিয়ে। বরাকেও তাই। এখানে ট্রেন না চললেও ঘোড়ায় চড়ে মন্ত্রপুত্র ঘুরে বেড়ায়। সব কিছু ছাড়িয়ে এই সময়ে বড় হয়ে উঠেছে আমাদের সাংস্কৃতিক অসহায়তা। বাইরের পৃথিবী বরাকের সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে অনবহিত। আমরাও বাইরের পৃথিবীর সাথে সেতু তৈরি কোনো চেষ্টা তৈরি করছি না। আমার ভাবলে অদ্ভুত লাগে, আজ অবধি বরাকের ভাষা সংগ্রাম ও তার উত্তরাধিকার নিয়ে কোনো চর্চা উত্তর পূর্ব ভারতের বৃহত্তর গণতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কোনো উদ্যোগই কেউ নিলেন না। এখানকার সাংস্কৃতিক আন্দোলন একটি আঞ্চলিক রূপ নিয়ে এই অঞ্চলেই টিঁকে আছে। অথচ আমরা বাইরে যাচ্ছি না, তা নয়। কেউ গান গাইতে, কেউ বক্তৃতা দিতে, কেউ কবিতা পড়তে অহরহ যাচ্ছি বাইরে। কিন্তু এখানকার ভাষা সংগ্রাম যে বৃহত্তর উত্তর পূর্বের রাজনীতির প্রেক্ষিতেও যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে, এই বার্তা আজো পৌঁছায় নি বাইরে। অন্য ভাষাভাষীদের কথা না হয় ছেড়েই দিলাম, ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বাঙালি বা পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের বড় অংশই জানেন না, এখানকার ভাষা সংগ্রামের প্রকৃত স্বরূপ ও বৈশিষ্ট্য। এঁদের সকলেরই ধারণা, বরাকের বাঙালিরা বহিরাগত, এসেছেন দেশভাগের বলি হয়ে। এখানে এসে স্থানীয় মানুষদের বিতাড়িত করে এখানকার মাটি জল সংস্কৃতি দখল করে নিয়েছেন। বরাকের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের রাজনৈতিক উপস্থাপন বিগত দশকগুলিতে সম্ভবপর হয় নি। দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলগুলির ক্ষমতা দখলের রাজনীতির সাথে এই বিষয়টির প্রয়োজনীয়তা খুব একটা ছিল না। বামপন্থী দলগুলিও এখানকার মাটির সাথে বামপন্থাকে সম্পৃত্ত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। সংস্কৃতি ও রাজনীতির মেলবন্ধন দু’ধরনের হয়। একটি মেলবন্ধন ঘটায় চরম দক্ষিণপন্থীরা। ধর্ম এবং সংস্কৃতির মধ্যে গুলিয়ে দিয়ে রাজনীতির সাথে এর মিশেল করে তারা মূলত এক ধরনের ফ্যাসীবাদের চর্চা করেন। সাধারণ দক্ষিণপন্থীদের রাজনীতির সবটাই ক্ষমতা দখলকেন্দ্রীক। কোনো বিশেষ মতাদর্শে সমাজকে চালিত করার কোনো দায় এঁদের নেই। সাংস্কৃতিক রাজনীতি বামপন্থীদেরও ঐতিহাসিক দায়। কিন্তু এই রাজনীতির যথার্থ সংজ্ঞায়ন সব সময়ে হয় না। হয় না বলেই দেখা যায় কোনো বিশেষ বিশেষ অঞ্চলে বামপন্থীরা একটি ছোট্ট বৃত্তের মধ্যেই আটকে থাকে। যেখানে সংজ্ঞায়ন যথার্থ হয় সেখানেই একটি কিউবা, একটি লাতিন আমেরিকা, কিংবা একটি ত্রিপুরার জন্ম হয়। আমাদের অঞ্চলে এর প্রাথমিক ইঙ্গিত থাকা সত্ত্বেও তা ঘটে নি।
উনিশের শিরোনামে এই উপত্যকার ভাষা সংস্কৃতি বিষয়ে ওয়েব সাইট তৈরির বিষয়টির হয়তো প্রত্যক্ষত কোনো সম্পর্ক নেই বলেই মনে হবে কারো। কিন্তু রয়েছে, আমার বিবেচনায়। হেমাঙ্গ বিশ্বাস বলেছিলেন এখানেই একটি ব্যক্তিগত আলাপচারিতায়। পৃথিবীর অনেক দেশেই দেখা গেছে, সাংস্কৃতিক আন্দোলন কখনো কখনো রাজনৈতিক আন্দোলনকে ছাড়িয়ে যায়। আমাদের প্রতিবেশি বাংলাদেশ হয়ত তার জ্বলন্ত উদাহরণ। আমাদের বরাক উপত্যকার সাংস্কৃতিক আন্দোলনেরও এই জোর রয়েছে। ভোট রাজনীতির বিচিত্রলীলা এই, শহীদের হত্যাকারীও এখানে বিধায়ক হন, আসাম চুক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার বরাকে ওই পটভূমিতেই চুক্তি-সমর্থক দলের প্রার্থীও বিধায়ক নির্বাচিত হয়ে যান। বরাকের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি এখানকার ভোট রাজনীতিতে কখনোই প্রাসঙ্গিক না হয়ে উঠলেও হাজার দুর্বলতা সত্ত্বেও একে জাগরুক রেখেছেন মূলত সংস্কৃতিকর্মীরাই। সংস্কৃতিকর্মী বলতে শুধু গান নাচ যারা করেন তারাই নন। বরাকে যারা বিদ্যাচর্চার সাথে যুক্ত, বিশেষ করে সমাজ বিজ্ঞান ও ভাষা নিয়ে, তাঁরাও প্রকৃতপক্ষে সংস্কৃতিকর্মীই। ফলে সংস্কৃতিকর্মীদের এই ব্যাপ্ত সমাজই প্রকৃতপক্ষে বরাক উপত্যকায় মূল রাজনৈতিক সংগ্রামী। আমাদের কবি দিলীপ লস্করের বহু আলোচিত সেই কবিতা বা কালিকা প্রসাদের এপার বাংলা গানও আসলে একটি রাজনৈতিক উচ্চারণ। এটা বলার অর্থ এটাও নয় যে, এই সংস্কৃতি অঙ্গনে সব ভালোয় ভালোয় চলছে। ভোট-রাজনীতির নোংরা জল আমাদের এখানেও একটু একটু করে ঢুকছে। সেজন্যেই ইস্যু নির্মাণ ও ইস্যু কবর দেওয়ার মতো হীন রাজনৈতিক কাজটিও মাঝে মাঝে সংস্কৃতি অঙ্গন থেকেই হচ্ছে।
এই পটভূমিতেই উনিশে মে ডট অর্গের ভাবনার জন্ম। বাঙালিবৃত্ত ছাড়িয়ে বৃহত্তর অ-বাংলা সমাজের কাছে আমাদের বার্তা পৌঁছে দিতে গোটা সাইটকে ইংরেজি ও বাংলায় তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেহেতু আমাদের সংস্কৃতি রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট অনেক বেশি ভাবে হয়ে আছে অন্য অঞ্চলের তুলনায়, তাই রাজনীতি সম্পর্কে নিবন্ধও এই ওয়েব সাইটের বিষয়। আবার যে ভূগোলের কথা বলব, তা যে ইতিহাসের সাথে দ্বন্দ্ব সমাসে বিরাজ করছে সেই কবে থেকেই, তাই ভূগোলের কথা বলতে গিয়ে অবধারিতভাবে এসেছে ইতিহাসের প্রসঙ্গ। থাকছে আমাদের কবিতা গল্প নাটক নাগরিক ও লোকগান. প্রতিবেশিভাষার সংস্কৃতির উপাদান।
এবারের উনিশের সন্ধ্যায় শিলচরের জেলা গ্রন্থাগার মঞ্চে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চের অনুষ্ঠানে এর উন্মোচন করেছেন আমাদের উপত্যকার রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক সংগ্রামের শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধি, সংস্কৃতিকর্মীদের মাতৃস্বরূপা শ্রদ্ধেয় অনুরূপা দি, অনুরূপা বিশ্বাস। কৃষক শ্রমিক সহ সাধারণ মানুষের গণআন্দোলন থেকে সাংস্কৃতিক সংগ্রাম বইছে তাঁর ধমনীতে। শিলচরের জেলা গ্রন্থাগার মিলনায়তনে প্রায় সাড়ে সাতশো মানুষের উপস্থিতিতে উন্মোচিত হয়েছে উনিশে মে ডট অর্গ আনুষ্ঠানিকভাবে। সেদিনের অনুষ্ঠানে যাঁরা ছিলেন তারা তো বটেই, বর্ষণমুখর সন্ধ্যায় যাঁরা আসতে পারেন নি. তারাও ই-মেলে বার্তা পাঠিয়ে, ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ভরসা দিয়েছেন পাশে থাকার। সাংস্কৃতিক সংগ্রাম যেমন একটি বহমান বাস্তবতা, তেমনি ওয়েব সাইটও একটি নিয়ত বহমান। এই মুহুর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, উনিশের সন্ধ্যায় সফল যাত্রারম্ভের আত্মপ্রসাদ নয়। আরো বহু বহু উনিশ এঁকে বাঁচিয়ে রাখা। এটা কখনো একটি ছোট্ট গোষ্ঠীর পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আমাদের স্বপ্ন, এই ওয়েব সাইটের সাথে যুক্ত ব্লগ, উনিশেমে ডট ব্লগস্পট ডট কমের মাধ্যমে এই উদ্যোগের সাথে যুক্ত হোক হাজার হাজার মানুষ। বরাক উপত্যকার শুধু বাঙালি নয়, নানা জনগোষ্ঠীর মানুষের স্বপ্ন ও সংগ্রাম, তাঁদের সৃজন জগৎ প্রকাশিত হোক এই ওয়েব সাইটের মাধ্যমে। ভারতের উত্তর পূর্ব অংশের সামাজিক সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের মধ্যে অবস্থিত এই বাঙালি জনপদ যে বহুত্বের সাধনা করে আসছে সেই কবে থেকে তা মূর্ত হয়ে উঠুক উনিশে মে ডট অর্গের পাতায় পাতায়।

From Saptarshi Mazumdar, Dimapur

Dear Sir
This is indeed commendable work. I truly appreciate your effort from the very core of my heart. My family hails from Silchar. My ancestral house was in Daccai Patty, Sadarghat. I was born and brought up there and I feel the present generation must know about the politics of language. I am a teacher by profession and I used to teach “The Last Lesson by Alphonse Daudet”. It’s a beautiful story about language and identity.
We know our stories, but unfortunately many among us know not the reality. I have come across many Bengalis (born after 1975) especially from central and upper Assam who know nothing about the revolution of 19th May that rocked Cachar and brought the then tyrannical Government of Assam to its keen.
The message of the martyrs needs to be spread. Their blood was not shed in vain. People need to know what the love for mother tongue is and how it is an inseparable aspect of our identity and last but not least how the Bengalis of Barak Valley have again and again paid tribute to their Mother Tongue by their blood.



I must say again that you have done a really good thing. The website http://www.unishemay.org will tell the Bengali youth of NE India about who they are and what their identity is; and to all others it will show a chunk of history that ought not to be forgotten because forgetting it will be forgetting our mother and forgetting ourselves.

Regards

Saptarshi Majumder

TGT English

Kendriya Vidyalaya Dimapur

Dimapur, Nagaland -797112

unishemay.org launched in Silchar

Coinciding with the commemoration of fifty years of the historic 19 May the first ever website on the language movement of Barak Valley, unishemay.org was mouse clicked by the noted poetess Anurupa Biswas before a huge gathering in the District Library Auditorium here in Silchar.

The septuagenarian Biswas was visibly moved by emotion as she was recollecting her long cherished dream of the saga of the language martyrs reaching far and wide. ‘This attempt of launching an exclusive website dedicated to the language movement of the Valley’, she said, ‘would be the first step in the right direction of globalizing the protracted fight of our people against all kinds of linguistic aggression’.

In the presence of the editorial team members of the web portal Subhaprasad Nandi Mazumder spoke of the objectives of this venture. The platform of the Sammilito Sangskritik Mancha, an umbrella organization of thirty three cultural groups of Silchar, was used as the launching pad for the website in the evening of 19 May where around four hundred odd strong audiences enjoyed every page of the site projected on the giant screen of the auditorium.

As Amitabha Deb Choudhury, presenter on the occasion, was narrating the subtle nuances of the struggle of the Valley people on various fronts from identity to literature to culture and publishing expressions, the youngest member of the editorial team Arjun Choudhury handed over the memento to Anurupa Biswas as a mark of love and reverence from the website team. Arjun has contributed profusely to the content development of the website with his translating prowess.

Biswajit Das, the Secretary of the Sammilito Sangskritik Mancha, spoke on the occasion when Kabir Hussain, a key member in the techno-team of the site, was navigating through the pages scrolling the annals of geography, history, culture, politics, literature and language movement of Barak Valley. Partha Seal whose camera has done wonders on the site was also present in the programme

Joydeep Biswas

Sunday, May 16, 2010

From"dibyendu das"

Dear Suvho da,


First of all congratulation and thank you for the work. You people had really done an appreciable job by creating the "Unishe May" website, It will be very nice if you can ask people or by yourselves to upload some pictures,comments about the feelings of the day Unishe May. Now, I would like to request you please try make a film on Unishe May. I know you and your team can do that. It is obviously be a bit tuff but If you can make a film then our next generation will know what exactly is the Unishe May. Because after 30/35 years from now there will not be any living eye witness to tell anything about the special day of the bengalees of the valley. Its a request from me, please keep it in your mind so that it can become a reality. I really think it is possible.


Thank you very much again for the effort you people put to create the website.


Yours truly


Dibyendu Das(Nupur)
Silchar.

Wednesday, May 5, 2010

We testify

A river is called Barak. A date frozen in the calendar is 19th May. In 1961 when world woke up to celebrate the birth centenary of its poet-laureate, Rabindranath Tagore, the two banks of Barak rose to an wake up call to defend its legitimate right to sing in Tagore’s language, to dream in Tagore’s language, to live a Bengali life. In the railway track of the district town, Silchar of the then undivided district of Cachar of Assam, ten young men and a woman fell down to the bullets of the state police. In the aftermath of the valiant sacrifices of the martyrs, Bengali was made the official language of the three districts of present day Barak valley. The struggle that gave back Bengali its rightful place was never a struggle of the Bengalis’ alone. First to resign from Assam Legislative Assembly in protest of firing was Nanda kishore Singha, a Bishnupriya Manipuri. In a silent protest against the brutal police firing and consequent death of eleven martyrs, thousands of Khasi men and women were on the streets of Shillong. The pluralism exuding out of these events was the essence of the language struggle of 1961. Struggle for a pluralistic polity and life in a multilingual, multiethnic state like Assam is the uniqueness of the Bengalis’ language struggle of the state. Struggle for pluralism against the chauvinistic policies of the ruling classes took its thread from 1961 and went through the tumultuous events of 1972, 1986 and 1995. Bachchu Chakraborty in 1972, Jaganmoy Deb (Jagan) and Dibyendu Das (Jishu) in 1986, in Karimganj and valiant Sudeshna Sinha, a fighter for the cause of her mother tongue, Bishnupriya Manipuri in 1995 in Kalkalighat- followed the footsteps of the eleven martyrs of 1961 and joined the long column of glorious martyrs of history. History and Geography of this land, for long have been engaged in a duel which left an indelible imprint on the archaic memory of the populace. Our literature, our music and our folklore murmur the never-ending agony, the refrain of eternal tragedy of this land. The saga of our journey through the lonesome roads of history remains unheard till date. On the fiftieth day of the supreme sacrifice of the martyrs, we launch this website to make our presence felt in the fraternity of web-world to plead our own case, with a hope to share our tears and laughter, our trials and tribulations, our triumphs and fall in the annals of history with the likeminded struggling masses across the globe.

................

Let’s be friends!